জয় রাম, জয় গোবিন্দ,,
শ্রীশ্রীরামঠাকুর ১২৬৬বাং ২১শে মাঘ, বৃহস্পতিবার, মাঘী দশমী তিথিতে এই ধরাধামে আবির্ভূত হইয়াছেন।জ্যোতিষীদের বিচারে ইহা অতীব শুভদিন।এমনি এক প্রশস্ত লগ্নে রাঢ়ীয় ভরদ্বাজ ব্রাহ্মণকুলে তিনি আবির্ভূত হইলেন।তাঁহার সঙ্গে আসিলেন ভাই লক্ষ্মন।শতবার্ষিকী স্মারকগ্রন্থে শ্রীশ্রীরামঠাকুরের জন্ম সম্বন্ধে বলা হইয়াছে,শ্রীশ্রীঠাকুরের পিতৃদেব ঁরাধামাধব চক্রবর্ত্তী বিদ্যালঙ্কার একজন যোগসিদ্ধ মহাপুরুষ ছিলেন।তিনি পঞ্চবটিতে যোগাভ্যাস ও সাধন-ভজনে অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করিতেন।এই পঞ্চবটিতেই তিনি সিদ্ধিলাভ করেন।এই জন্যই পঞ্চবটি পূণ্যভুমি নামে খ্যাত আছে।
যেদিন যে সময়ে শ্রীশ্রীরামঠাকুর মাতৃগর্ভ হইতে ভূমিষ্ট হইলেন, ঐ সময়েও তিনি সাধনায় নিমগ্ন ছিলেন।শ্রীশ্রীঠাকুর ভূমিষ্ট হওয়ার পর মাতৃদেবী অসুস্থ হইয়া পড়িলেন।অল্পক্ষণ পরই একটি থলির মধ্যে আর একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ট হইল।প্রথমাবস্থায় এই থলির মধ্যে কোন সন্তান আছে তাহা উপলব্ধি করা যায় নাই।এমন সময় ঠাকুরের পিতৃদেব পঞ্চবটী হইতে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করিয়া থলি হইতে সন্তান বাহির করাইয়া তাহার প্রাণ বাঁচাইলেন।এই সন্তানটিই সহজাত ভ্রাতা লক্ষ্মণ।এই সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর বলিয়াছিলেন,অপূর্ব কথা।প্রারব্ধ ভোগ করিতে হয়।জন্মকালে গ্রহনক্ষত্রের যে অবস্থান থাকে তাহার ভিতর দিয়া আসিবার সময় দৃষ্টি যে পড়ে,সেই অনুসারে জীবনের পথ তৈরি হইয়া থাকে।ইহার মধ্য দিয়াই আসিতে হয়।এক ইঞ্চি ডাইনে বা বামে আসিবার উপায় নাই।এই পথের নামই ভবিষ্যৎ।এই ভাগ্য ভোগ করা ছাড়া অন্য কোন উপায় নাই।
অন্যত্র উল্লেখ আছে,যে মুহুর্তে রাম-লক্ষ্মণ ভূমিষ্ট হইলেন সে সময় তাঁদের পিতৃদেব গৃহে ছিলেন না।তিনি বাড়ি হইতে পাঁচ মাইল দূরে কোন এক গ্রামে কার্যবশত গিয়াছিলেন।যমজপুত্র ভূমিষ্ট হওয়া মাত্র তিনি জানিতে পারিয়া তৎক্ষনাৎ গৃহাভিমুখে রওনা হইলেন।প্রথমে রাম পরে লক্ষ্মণ ভূমিষ্ট হইলেন।প্রথম শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর প্রসূতির গর্ভযন্ত্রণার উপশম হইল না।কিয়ৎক্ষন পর দ্বিতীয় সন্তানটি ভূমিষ্ট হইল।একটি সূক্ষ্ম আবরণে সন্তানটিকে আবৃত দেখা গেল।প্রথম দর্শনে সন্তানটিকে মৃত স্থির করিয়া একখানি সুপারি বৃক্ষের খোলের উপর রাখিয়া দেওয়া হইল।ধাত্রী ও প্রসূতি প্রথম সন্তানটিকে সেবা-যত্নের দ্বারা সুস্থ করিলেন।দ্বিতীয় সন্তানটি মৃত মনে করিয়া মাটিতে পুঁতিয়া রাখিবার ব্যবস্থা হইতেছে,এমন সময় পিতৃদেব পুকুর পাড় হইতে চীৎকার করিয়া বলিতে লাগিলেন,ফেলিও না,ও সন্তান মৃত নহে।তিনি সকলকে আশ্চর্যান্বিত করিয়া সন্তানটির আবরণ মুক্ত করাইলেন।কিছুক্ষণ শুশ্রূষার পর সন্তানটি চক্ষু মেলিয়া চাহিল।
শ্রীশ্রীকৈবল্যনাথ স্মরণে
ডা: খগেন্দ্রনাথ গুপ্ত
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন