তোমরা যেমন সৎ সৎলোকের সঙ্গে, মন্দ মন্দলোকের সঙ্গে মিশে থাকতে ভালোবাসো। তাগো বেলায় ও সেই রকম।


আমি ( ফনীন্দ্র কুমার মালাকার )নোট বই ও কলম হাতে লইয়া বলিলাম," ঠাকুর, আজ জঞ্জাল পূর্ণ পাইন বাগানের কাহিনী শুনতে এসেছি।
আমি---- শিলংএ পাইন বৃক্ষের বহু বাগান আছে?
আমি----- তার মধ্যে ১০ টি বাগানে আমাদের নিয়ে গিয়ে নাম কীর্তন করিয়েছিলে। নির্জন নিরালা পাইন বাগানে কীর্তনের কি প্রয়োজন ছিল?
ঠাকুর----- নিশ্চয়ই প্রয়োজন ছিল। তারকব্রহ্ম ১৬ নাম ৩২ অক্ষর হরে কৃষ্ণ রাম হইল প্রণবের তিনটি অবয় অ উ ম। অর্থ হইলো তন্ময় তার সঙ্গে হরিনামে রমন করা। প্রণব কীর্তনের ফল সর্বত্র, সর্বকালে সমভাবে হইয়া থাকে। তারতম্য কিছু নাই। যেমন, অমৃত পানে স্বাদ তিক্ত, কষা, কটু, মিষ্ট
যেমনি লাগুক, অমৃত অমৃতের ফল দিবেই। সেরূপ এই নাম করতে ভালো-মন্দ রুচি,অরুচি যেমন লাগুক না কেন, নাম নামের ফল অবশ্য দিবে। এই কীর্তন শ্রবণে বৃক্ষ তরুলতা পতঙ্গাদি সকল জীবের উন্নত অবস্থা প্রাপ্তি হয়।
আমি---- ঐ ১০ টি বাগানকে লক্ষ্য করেই জঞ্জালপূর্ণ বলেছিলে?
ঠাকুর --- হ তাই।
আমি----কেন? শিলংয়ে আরো বহু পাইন বাগান রয়েছে।
ঠাকুর ----- থাকলে কি হইব? শুধু ওই বাগান গুলিতেই হাজার হাজার বিদ্রোহী আত্মা আশ্রয় নিয়েছিল। তাগো মধ্যেও ভালো মন্দ রকমের ফের আছে। তোমরা যেমন সৎ সৎলোকের সঙ্গে, মন্দ মন্দলোকের সঙ্গে মিশা থাকতে ভালোবাসো, তাগো বেলাও সেইরকম। তারা তাগ অবস্থান্তর প্রাপ্তির জন্য সর্বদা আইসা কাকুতি-- মিনতি জানাই তো।
আমি---- আমাদের কীর্তনের ফলেই বিদ্রোহী আত্মাগুলির অবস্থানর প্রাপ্তি ঘটে?
ঠাকুর--- নিশ্চয়ই। নামের অসীম ও অমোঘ শক্তি। অসম্ভব সম্ভব করতে পারে একমাত্র নামে।
আমি----- মানব দেহত্যাগের পর সকলেই কি বিদোহী অবস্থায় থাকতে হয়? নাকি কেউ কেউ সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় মানব জন্ম পায়?
ঠাকুর----- পূর্বজন্মের কৃতকর্মের ফল অনুযায়ী বিধান করেন ভবিতব্য।
আমি----- ভবিতব্য কি ভগবান?
ঠাকুর ---না, ভবিতব্য ভগবান নন। জীবের জন্মান্তরীন কর্মফল অনুযায়ী জন্ম কর্ম ও মৃত্যুর বিধায়ক ভবিতব্য। ভবিতব্যের আশ্রয়ে থাকতে ভগবত প্রাপ্তি ঘটে না। মায়াচক্রের অধীন থাইক্কা ভবিতব্যের হাত এড়ান যায় না। গতাগতি ঘুচলে ভবিতব্য থাকে না, ভগবত সন্নিধানে যাওয়া যায়।




মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন